আমার গল্পকথা ও রূপকথা যা সব এদিক-ওদিক ছড়ানো শিমুল তুলো। কোন বইতে আছে বা নেই। আরো নতুন বই যা যা ভাবছি, বিশেষত- বাংলাদেশের অপর রূপকথা, তার কিছু লেখা থাক এখানে শুয়োঁপোকা হয়ে। নিজে পড়ুন ও অন্যকে পড়ান না হলে বলুন ডিলিট করে দিতে, মাঝামাঝি কিছু হতে পারে না।
Sunday, August 15, 2010
ঘু ঘুড়ি ঘুড্ডি বাবা
আকাশ আস্তে আস্তে ভরে উঠল লাল নীল হলুদ কমলা বেগুণী গোলাপী সবুজ রঙে। রঙ বেরঙের ঘুড়িতে আকাশ যেন ছিট কাপড়ের জামা।। অ্যাসেম্বলিতে সভা বসলে হয় কবিগান আর তরজা, সে এক অপরূপ ব্যাপার। সেনারা দৌড়ে এল প্রধানমন্ত্রীর কাছে ম্যাডাম সারা আকাশ ঘুড়িতে ঢেকে গেছে, হেলিকপ্টার-প্লেন কিস্যু ওড়ানো যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর সেদিন এমনিতেই ঘুম ভাল হয়নি, বিশ্রী একটা স্বপ্ন দেখেছেন। গোটা আর্মির কাপড়-জামা দিয়ে এলিয়েনরা ঘুড়ি বানিয়ে ওড়াচ্ছে আর সেনা বাহিনীর দামড়াগুলো উদ্যোম হয়ে দৌড়াচ্ছে ঘুড়ির পেছন পেছন, ঘেউ ঘেউ করে। প্রধানমন্ত্রী চোখ বড়বড় করে তাদের ধমকে দিলেন, যাও তোরা নিজের চরকায় তেল দাও।
প্রধানমন্ত্রীর ইষদউষ্ণ ঘিতে চুমুক দিতে দিতে তিনদিন অনেক ভাবলেন কিন' কোন কূল কিনারা পেলেন না। এ কি হোলো রে! লোকে পড়াশোনার বই-খাতা, ধর্মগ্রন্থ, সরকারী দস্তাবেজ, প্রাচীন পুঁথি, বাড়ির দলিল, খবরের কাগজ সবকিছুই বানাচ্ছে রঙ-বেরঙের ঘুড়ি। আর ওড়াচ্ছে। বাজার রাস্তাঘাট সমস্ত ফাঁকা শুদু সেনা বাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে।। কি দুর্ভোগ রে বাবা! তিনি ক্ষমতায় এসেই জটিল এক নদী চুক্তি করেছিলেন প্রতিবেশী দেশের সাথে। নদী শুকিয়ে কি সুন্দর সুন্দর সব চর গজিয়েছিল, আহা ভেবেছিলেন ডিজিটাল হাব করবেন। সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁস এদের সইবে কেন? চরে গেছে ঘুড়ি ওড়াতে, ফালতু ঝামেলা। আকাশের সেই অদভূত রূপ দেখে মন্ত্রীরা সব কবি হয়ে গেল, ঘুড়ির নাম দিতে লাগল; পেটকাটি, চাঁদিয়াল, বগ্গা তাও হেলিকপ্টার রাস্তায় হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে...
লেখাটি পুরো পড়তে ক্লিক করুন এইখানে।
লেখাটি আমার বেশ পছন্দের যদিও একটি পত্রিকায় প্রকাশ পায়নি, আজও জানি না কেন? শেষে প্রকাশিত হয়েছে সাপলুডুতে। সঙ্গের ছবিটি আমার তোলা পদ্মার চরে ঘুড়ি উৎসবে, যদিও বলে দেওয়াই ভাল তার সঙ্গে এই লেখার মিল খোঁজা উচিত নয় একেবারে। এটিও থাকবে নতুন বইটিতে।
স্থবিরহাট
...ছাত্ররা বিদ্যালয়ের পরে চারুকলার ঠিক সামনে ছোট্ট জায়গায় সমবেত হয়, প্রতিবাদও করে, এই একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার। তবে সেখানে শিল্পাচার্য রূপকুমার তৈরি করেছেন চমৎকার আবহ। তাঁর আঁকা ‘গোলাপী’ ছবি সেখানে টানানো থাকে। নিজে কাজও করেন সেখানে, কখনো দেখা যায় কয়েক ঝুড়ি ডিমে বসে বসে গোলাপী রঙ করছেন। কখনও বা গোলাপী কাগজ কেটে ঘুড়ি বানাচ্ছেন। ছাত্র ছাত্রীরা হাত লাগায় তাঁর সঙ্গে। হৈ চৈ হয়। কোকিল ব্যান্ডের লোকজন গান গায়। চারপাশে মস্ত মস্ত সব গাছে গোলাপী রঙের সাকুরা ফুটে থাকে, চমৎকার পরিবেশ। হাটের মত ছবি কেনা-বেচাও হয়। শিল্পাচার্য এ জায়গার নাম দিয়েছেন ‘স্থবির হাট’। সাকিল ভাই বলেন, হবির হাট। ‘স’এর দোষ তার এখনও কাটেনি। মাঝে মাঝে জোটে কিছু বাউল-ফকির। তখন তো রীতিমত উৎসব। গোলাপীর নির্দেশে সেনাবাহিনীর লোক ছবির হাটে কড়া পাহারা দেয় বটে তবে শিল্পাচার্যকে বেশি ঘাটায় না তারা। এমনকি ছেলেমেয়েদেরও। কেননা, দেশে প্রচুর শিল্পী চাই, দ্রুত। যত শীঘ্র সম্ভব সমস্ত কিছু কালো রঙ দিয়ে ঢেকে ফেলা বাস্তবায়ন করতে হবে! এর মধ্যে দেখা গেল এক আধ পাগলা বুড়ো হাজির এক লড়ঝড়ে ক্যামেরা নিয়ে। সে অবশ্য ছবি তোলে শুধু আকাশের, কখনো শুয়ে কখনও গাছে চড়ে তোলে আকাশের ছবি। একদা সেই চিনতে পারে শিল্পাচার্যকে, ভাই বলে জড়িয়ে ধরে সে। রূপকুমার প্রথমে থতমত খেলেও ধীরে ধীরে বুঝতে পারে সেই তার হারিয়ে যাওয়া ভাই অপরূপকুমার।
রাজাদের ভিতর এই ভাই ভাই ব্যপারটা কখনই ভাল দিকে গড়ায় না। আর যখন সম্পত্তি হিসেবে আছে একটা গোটা দেশ। গোলাপী তার অধিকার ছাড়তে চাইবে কেন? ষড়যন্ত্রে কী না হয়। অপরূপকুমারকে পিতৃহত্যার মামলায় গ্রেপ্তার করা হল। ফাঁসানো হল নারী পাচারের কাজে, তাকে গোপন এলাকায় রেখে রোজই জেরা করে সেনাপ্রধান স্বয়ং। পরদিন কাগজে, দেখা যায় সব চাঞ্চল্যকর নতুন তথ্য। অপরূপকুমারের ক্যামেরা আর মেমোরিকার্ড আগেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল এইবার সেগুলোই হয়ে উঠল অন্যপক্ষের হাতিয়ার। তাতে দেখে গেল নারীদেহের বিভিন্নাংশের ছবি। সেনাবাহিনী এযাবৎ যত নারী ধর্ষণ কর, খুন করে বেওয়ারিশ বলে ফেলে দিয়েছিল, জানা গেল, এগুলো সব অপরূপ ডনের কাজ, ছবিগুলো নাকি তারই প্রমাণ! বাস্তব প্রকৃতই নিষ্ঠুর। ‘স্থবির হাটে’ শুরু হল দীর্ঘকালীন বডি পার্টসের প্রদর্শনী। লোক এল, দেখল, বিশ্বাস করল। সবাই থুতু ছেটাতে শুরু লাগল অপরূপকুমারের ছবিতে, দাহ করল কুশপুত্তলিকা। সমস্ত খবরে, লোকের মুখে তখন কেবল এক প্রদর্শনীর কথা ‘ক্রসফায়ার এন্ড এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং’। আম্রিকায় বসে সব খবরই পেলেন ম্যাডাম আকাশী। সে বহুদিন আগেই অপরূপকুমারকে ছেড়ে এক বিদেশীর সঙ্গে হলিউডে পাড়ি দিয়েছিল। দেশের রিপোর্টাররা সবাই আম্রিকায় যেতে লাগল আকাশীর একটা স্টেটমেন্ট পাওয়ার জন্যে। কিন্তু তিনি মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেন, অপরূপকুমারের মৃত্যুদন্ড ঘোষণার ব্যপারে কোনো স্টেটমেন্ট দিলেন না।...
পুরো মালটা পাবেন এইখানে। কোন ব্যক্তি বা স্থানের সঙ্গে কোন রূপ মিল পেলে তা কাকতালীয় বলে মনে করাই ভাল। তা মোটেও ইচ্ছাকৃত নয় জানবেন। এই সিরিজের এইলেখাটি লেখা অবশ্য বাংলাদেশের বাইরে বসে তবে তাতে কিছু আসে যায় না।
সাপলুডু
সেই দেশে সকলেই ছিল খেলায় মত্ত। প্রজারা সারাদিন ঘরে বসে হরেক কিসিমের সাপলুডু খেলত, কারুর কোন কাজ করা লাগত না। সেই রাজ্যের রাজা ছিলেন সাপলুডু খেলায় মহা ওস্তাদ। খেলতে বসলে তার আর দিন রাতের হিসাব থাকত না। তাই খেলার জন্য সবসময় আলোয় ঝলমল করত প্রাসাদ। বিদ্যুতের ছিল অফুরন্ত যোগান। লোডশেডিং বলে কোন শব্দ তার কোনদিন শোনেইনি। পিঁপড়েরা মাটি খুড়লেই উঠে আসত পেল্লাই পেল্লাই কয়লার চাঙড়, সারা দেশেই তা ছিল অফুরন্ত। এছাড়া পারমানবিক বিদ্যুৎ আর রাসায়নিক বিদ্যুৎ ছিল অপারেশন জলভাত।
বিভিন্ন দেশ থেকে রানী বাছাই করে আনা সাপলুডু খেলিয়ে খেলিয়ে। রাজপ্রাসাদে ৯৯ জন রানীদের ছিল ঠিক ১০০টা ঘর। রাজা একেকদিন খেলতে বসতেন একেকজন রানীর সঙ্গে। ছক্কা থেকে পুট যাই পড়ত সেই হিসাবে রানীর ঘর বদলে যেত। কেউ মই বেয়ে তরতর করে উপরে উঠত আবার আবার কেউ সাপের মুখে পড়ে সাঁ করে নেমে যেত।। এতটুকু ভুলচুক তার সহ্য হোত না। রাজা ভারী আমোদ পেতেন রানীদের সঙ্গে সাপলুডু খেলে কিন' তার নিয়ম ছিল খুব কড়া
বিস্তারিত পড়ুন- এইখানে
এইটাই বোধ হয় এই সিরিজের প্রথম লেখা। ফর্ম বদলাতে চাইছিলাম কনসাসলি, এই দাঁড়াল, এবং পরপর ছোটবড় মিলিয়ে খান দশেক লিখেছি বাংলাদেশে বসে একবছরে। আপাতত এটি সাপলুডু ওয়েবসাইটটির ভূমিকা মত হয়ে দাঁড়িয়েছে। মধ্যে ছাপাও হয়েছিল সাপলুডোর ছাপানো কোর্টের পেছনে, বিক্রিবাটাও হয়েছিল খান কতক সেই ২০০৮ এ ছবির হাট, শাহবাগ ও চারুকলার বৈখাখীমেলায় সাপলুডু পারফরম্যান্সের সময়। জীবন সত্যিই বিচিত্র।
গায়ে মাখার হরলিক্স
লেখা হয়েছিল লোটাকম্বল ব্লগে তাও রোহনের একটি উওর-ব্লগ হিসেবে। সাগরের বুদ্ধিতে সামান্য বাড়িয়ে বেরোল সাপলুডু ওয়েবজিনে। তা বেরোল যখন এখানেও থাক, বই-ফই এ তো আর জায়গা হবে না। পড়ুন আপাতত এইখানে- http://www.shapludu.com/article10.php